পদ্মা নদীর অস্তিত্ব সংকট: ৫০ বছরে ফারাক্কার দীর্ঘ ছায়া

ভারতের ফারাক্কা ব্যারাজ চালুর পর পেরিয়ে গেছে পাঁচ দশক। এই সময়ের মধ্যে পদ্মা নদী ও তার শাখা নদ-নদীগুলোতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে—প্রবাহ কমেছে, চর পড়েছে, নদী সংকুচিত হয়ে পড়েছে। একসময় যে পদ্মা ছিল প্রবল স্রোতের প্রতীক, আজ তা অনেক জায়গায় সংকীর্ণ খালের রূপ নিয়েছে।
গবেষণা বলছে, ফারাক্কার কারণে পদ্মার পানিপ্রবাহ ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এর প্রভাবে পদ্মা থেকে সৃষ্টি হওয়া বড়াল, গড়াই, কপোতাক্ষ, ভৈরবসহ অনেক নদী প্রায় মৃতপ্রায়। রাজশাহীর গোদাগাড়ি, নাটোরের চারঘাট, কুষ্টিয়ার এলাকাগুলোতে বড়াল-গড়াই নদীগুলোতে পানির প্রবাহ নেই বললেই চলে। বর্ষায় কিছু পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে নদীর খাত পড়ে থাকে শুকনা চরে।
মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, পানির অভাবে মাছের প্রজাতি হ্রাস পেয়েছে, জীবন-জীবিকা হারিয়েছে বহু পরিবার। এক সময়ের কর্মব্যস্ত নৌপথ এখন প্রায় অচল। বড়াল নদীতে আগে মালবাহী নৌযান চলত, এখন তাতে হাঁটুজলও নেই।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, পদ্মার পানির ওপর নির্ভরশীল গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পও সময় সময় বন্ধ রাখতে হয়। পদ্মার সঙ্গে যুক্ত থাকা নদীগুলো মরে গেলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি ও জলজ প্রতিবেশ ব্যবস্থাও ঝুঁকিতে পড়বে।
গবেষক শেখ রোকন মনে করেন, ফারাক্কা বাঁধের পরিণতি হিসেবে এই সংকট তৈরি হয়েছে। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হচ্ছে, এর আগেই নতুন চুক্তি ও আন্তর্জাতিক সনদের অনুমোদনের ওপর গুরুত্বারোপ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র : বিবিসি