**দেশে গরু প্রবেশের নতুন রুট: সীমান্তে চোরাচালানের রমরমা**
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশে গরু প্রবেশের চিত্রে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। পূর্বে যেখানে উত্তরের সীমান্ত অঞ্চলগুলো ছিল গরু আসার মূল পথ, এখন সেখানে কমতি দেখা গেছে। বরং সিলেট ও সুনামগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে এখন ব্যাপকহারে ভারতীয় গরু আসছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্ত ব্যবহার করে আসছে মিয়ানমার থেকে বার্মিজ গরু। বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও রাতে সীমান্ত অতিক্রম করে চোরাই পথে গরু ঢোকার হার অনেক বেশি। ঢুকে পড়া এসব গরু স্থানীয় পশুর হাট থেকে রসিদের মাধ্যমে ‘বৈধতা’ পেয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন দেশের খামারিরা ও প্রান্তিক পশুপালকরা।
সিলেটের চার সীমান্ত উপজেলা—গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাটে চোরাচালান কার্যক্রম অনেকটা প্রকাশ্যেই চলছে। প্রতিদিনই এই সব এলাকা দিয়ে ভারতে তৈরি চিনি, কাপড়, ফলমূল, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গেই প্রবেশ করছে গরু ও মহিষ। মাঝে মাঝে বিজিবি অভিযান চালিয়ে কোটি টাকার পণ্য আটক করছে।
সুনামগঞ্জ সীমান্তেও একই ধরনের অবস্থা বিরাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বহুবার অভিযান চালিয়ে গরু আটক করলেও চক্রটি থেকে যাচ্ছে সক্রিয়। গত তিন মাসে প্রায় সাড়ে চারশ চোরাই গরু জব্দ করেছে বিজিবি।
এদিকে কক্সবাজার ও বান্দরবানে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ফের সক্রিয় হয়েছে বার্মিজ গরুর চোরাচালান। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে রাতের অন্ধকারে শত শত গরু প্রবেশ করছে। এই গরুগুলো পরে চাকঢালা, গর্জনিয়া ও ঈদগাহ হাটে রসিদের মাধ্যমে বৈধ করে মূল সড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে রাজশাহী, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরা সীমান্তে গরু আসা অনেকাংশেই কমেছে। বিশেষ করে বিএসএফ এবং বিজিবি’র কড়াকড়ির কারণে সীমান্ত টপকে গরু আসার সংখ্যা কমেছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। তবুও মাঝে মাঝে সীমান্ত ফাঁকি দিয়ে কিছু গরু প্রবেশ করছে, যেগুলোর অধিকাংশই আটক করছে বিজিবি।