গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে আরও প্রাণহানি, নিহতের সংখ্যা ৫১ হাজার ছাড়াল
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় নিহতের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, একদিনেই কমপক্ষে ৩২ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, আর আহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি। এই নিয়ে চলমান সংঘাতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫১ হাজার ২৬০ জন।
আল জাজিরা ও আনাদোলু এজেন্সির বরাত দিয়ে জানা যায়, গাজা শহরের গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা কেন্দ্র আল ডোরা শিশু হাসপাতালে ইসরায়েলের সরাসরি হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সারা উপত্যকাজুড়ে চালানো হামলায় বহু বাসিন্দা হতাহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে নিহত হয়েছে ৫১ হাজার ২৬৬ জন, আর আহত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার মানুষ। যাদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসার অপেক্ষায় রয়েছে। একই সঙ্গে হাজারো মানুষ এখনো ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও, মার্চের মাঝামাঝি হামাসের সঙ্গে মতবিরোধের পর ফের চালু হয় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ। ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন দফায় প্রায় ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৫ হাজার আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলমান হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা ঘরছাড়া হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি ধ্বংস হয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো—বাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল সবই এই আগ্রাসনের শিকার।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এরই মধ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাজায় গণহত্যার অভিযোগেও বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবারও শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, যাতে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের জীবন বাঁচানো যায় এবং অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত হয়।