কাশ্মিরে বসতবাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ভারতীয় বাহিনী ! বাড়ছে উত্তেজনা
কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। সম্প্রতি শ্রীনগর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানের সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি গুঁড়িয়ে ফেলা হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানিয়েছে টিআরটি গ্লোবাল।
প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একের পর এক বাড়ি ধ্বংস করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত অন্তত নয়টি বসতবাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ভারতীয় পুলিশ জানায়, শ্রীনগরে ব্যাপক পরিসরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে এবং বন্দিদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ৬৩ জন কারাবন্দীর বাড়িতে এরইমধ্যে তল্লাশি সম্পন্ন হয়েছে। পুরো কাশ্মির অঞ্চলে নিরাপত্তা অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানানো হয়।
এছাড়া, ভারতের দক্ষিণ কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলায় পেহেলগাম হামলার পর ১৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোট গ্রেপ্তার সংখ্যা ছাড়িয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি। এ অবস্থায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে, বান্দিপোরা জেলায় একজন কাশ্মিরী তরুণের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা ঘটনাটিকে ‘মিথ্যা এনকাউন্টার’ হিসেবে বর্ণনা করলেও ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করছে, নিহত ব্যক্তি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
ভারত সরকার এ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা, পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার, ভিসা বাতিল এবং মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি।
পাকিস্তান এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে এবং পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে, আকাশপথ বন্ধ করেছে ও ভারতের সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করেছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সিন্ধু নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করা হলে তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে।
এদিকে, ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় মিডিয়াকে সরাসরি প্রতিরক্ষা তৎপরতা সম্প্রচার না করার নির্দেশ দিয়েছে ‘জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায়’।
কাশ্মির দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। দুই পক্ষই পুরো কাশ্মির অঞ্চল নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে, ফলে স্থানীয় দ্বন্দ্ব বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: টিআরটি গ্লোবাল
